মিউজিয়ামে দেখিয়াছিলেন জানোয়ার পাথর (fossil) হইয়া গিয়াছে। ইহাতে সাধু সঙ্গে উপমা দিয়া বলিয়াছিলেন, সাধুসঙ্গের ফলে মানুষও সাধু হইয়া যায়।
Author Archives: HolyTrioFootPrints Admin
শ্রীরামকৃষ্ণদেবের পূতদেহ এই শ্মশানঘাটে ১৬-৮-১৮৮৬ তারিখে ভক্তবৃন্দ লইয়া গিয়া অগ্নিতে আহুতি প্রদান করেন। ওই স্থানটিতে একটি স্মারক মন্দির নির্মিত হইয়াছে। ইহার বর্তমান নাম — শ্রীরামকৃষ্ণ মহাশ্মশান।
শ্যামপুকুর বাটী হইতে ডাক্তারের পরমর্শে উন্মুক্ত পরিবেশে রাখিবার জন্য ভক্তগণ শ্রীশ্রীঠাকুরকে গোপালচন্দ্র ঘোষের এই উদ্যান বাটীতে ১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দের ডিসেম্বর আনয়ন করেন। শ্রীশ্রীঠাকুর এখানেই ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারী আত্মপ্রকাশে ভক্তদের অভয়প্রদান করেন। ওই ঘটনার স্মরণে আজও প্রতি বৎসর ১লা জানুয়ারি ‘কল্পতরু’ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই বাগানবাটীতে শ্রীশ্রীঠাকুর ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দের ১৬ই আগস্ট লীলাসংবরণ করেন। পরে এখানে শ্রীরামকৃষ্ণ মঠের একটি শাখাকেন্দ্র স্থাপিত হয়। বর্তমান ঠিকানা — ৯০ কাশীপুর রোড, কলিকাতা – ৭০০০০২।
কাশীপুর রোডের উপর দিয়া যেখানে Gun and Shell Factory-র রেললাইন গিয়াছে তাহার পূর্বসীমায় বসাক বাগানে মহিম চক্রবর্তির উদ্যানবাটী ছিল। এই বাড়িতে শ্রীশ্রীঠাকুর শুভাগমন করিয়াছিলেন। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পুঁথি প্রণেতা অক্ষয় কুমার সেন এই বাড়িতেই শ্রীরামকৃষ্ণকে প্রথম দর্শন করেন। এই বাড়ির এখন কোন চিহ্নই নাই।
Although the name of the temple is ‘Chitteshwari Sarvamangala Temple’, the temple is popularly known as ‘Sarvamangala Temple’. Sri Sri Thakur came to this temple a few times.Current Address : 15/1, Khagen Chatterjee Road, Kolkata – 700002.
শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ের নিকট এই বাড়িতে শ্রীশ্রীঠাকুর শুভাগমন করিয়াছিলেন। (শ্রীম-দর্শন ১৫শ খণ্ড)
শ্রীশ্রীঠাকুরের এখানে ব্রাহ্মসমাজের উৎসবে তিনবার শুভাগমনের কথা কথামৃতে উল্লেখ আছে (২৮-১০-১৮৮২, ২২-৪-১৮৮৩ ও ১৯-১০-১৮৮৪)। এইসব দিনের উৎসবে বহু ব্রাহ্মভক্তের সঙ্গে ভগবৎপ্রসঙ্গ ও কীর্তনাদি করিয়া ঠাকুর সমাধিস্থ হইয়াছিলেন। বর্তমানে এই উদ্যানবাটীটির সমাজগৃহ, সরোবর, উদ্যানসমেত ১৮ বিঘা জমি হস্তান্তরিত হইয়া বিভিন্ন প্লটে অনেক নতুন বাড়ি নির্মিত হইয়াছে। স্থানীয় ভক্তদের প্রচেষ্টায় সমাজ প্রাঙ্গণের একটি অংশে দেড় কাঠা জমিতে একটি বেদী নির্মিত হইয়াছে।
লীলাপ্রসঙ্গে গুরুভাব পূর্বার্ধ (ঝামাপুকুরে) ১ম অধ্যায়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের এখানে আসার কথা আছে। সেদিন কয়েকজন মহিলা ভক্ত দক্ষিণেশ্বরে তাঁহার দর্শনে গিয়াছিলেন। সেখানে দর্শন না পাইয়া এই বাড়িতে আসিয়া শ্রীশ্রীঠাকুরের দর্শনলাভপূর্বক তাঁহার সহিত কথাবার্তা বলিয়া ধন্যা হইয়াছিলেন। শ্রীশ্রীঠাকুর এই বাড়িতে জলযোগ ও আহারাদি করিয়া সেদিন দক্ষিণেশ্বরে ফিরিয়া যান।
এই মন্দির প্রায় ৩৫০ বৎসর পূর্বে নির্মিত। পৌরাণিক কাহিনীতে দেবী সতীর একটি অঙ্গুলি এখানে পড়িয়াছিল। ইহা হিন্দুদের একটি মহাতীর্থ। শ্রীশ্রীঠাকুর এই মহাতীর্থে কয়েকবার মায়ের দর্শনে আসিয়াছিলেন। ২৯-১২-১৮৮৩ তারিখে এখানে আসার কথা কথামৃতে উল্লিখিত আছে। লীলাপ্রসঙ্গে — গুরুভাব উত্তরার্ধ ৩য় অধ্যায়ে আছে কালীঘাট তীর্থে শ্রীশ্রীজগদম্বাকে দর্শন করিয়া আনন্দিত হইয়াছিলেন। সে সময় সঙ্গী ভক্তদের মধ্যে একজনকে বলিয়াছিলেন ‘দেবস্থান তীর্থস্থান দর্শনাদি করে এসে সেই সব ভাব নিয়ে থাকতে হয়। জাবর কাটতে হয়, তা নইলে ওসব ঈশ্বরীয় ভাব প্রাণে দাঁড়াবে কেন?’
শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয়ের স্মৃতি কথায় আছে একবার তিনি দক্ষিণেশ্বরে আসিলে শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁহাকে চিড়িয়াখানার সিংহ দেখাইবার জন্য অনুরোধ করেন। “সিংহ জগজ্জননী দেবী দুর্গার বাহন” বলিতে বলিতে তাঁহার মধ্যে এক অতীনিদ্রয় অনুভূতি জাগ্রত হইল। সেদিন শাস্ত্রীমহাশয়ের জরুরী কাজ থাকায় নিজে যাইতে পারেন নাই। সুকিয়া স্ট্রীট পর্যন্ত শ্রীশ্রীঠাকুরকে গাড়িতে লইয়া আসিয়া নরেন্দ্রনাথের দায়িত্বে তাঁহাকে চিড়িয়াখানায় পাঠান। কথামৃতে ২৪-২-১৮৮৪ তারিখের বিবরণে আছে — ‘চিড়িয়াখানা দেখাতে লয়ে গিছলো। সিংহ দর্শন করেই আমি সমাধিস্থ হয়ে গেলাম। ঈশ্বরীয় বাহনকে দেখে ঈশ্বরীয় উদ্দীপন হলো। — তখন আর অন্য জানোয়ার কে দেখে। সিংহ দেখেই ফিরে এলাম।’ প্রায় চল্লিশ একর পরিমিত স্থানে এই চিড়িয়াখানাতে অনেক প্রকারের বন্য প্রাণীর সংগ্রহ আছে।